লামা সংবাদদাতা :: লামার রুপসীপাড়ায় অর্ধশত মানুষের প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ‘নগদ অর্থ সহায়তার’ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে একই ইউনিয়নের চকিদার বেলালের বিরুদ্ধে। সে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের টিয়ারঝিরি এলাকার এনছান বিশ্বাস এর ছেলে।
আজ রবিবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে ১১ জন সুবিধাভোগী পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জমা দেন।
জানা যায়, করোনা সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নগদ ৫০ লাখ টাকা অনেকে অশিক্ষিত ও মোবাইল ব্যবহার করতে না জানার কারণে টাকা পাচ্ছিলেন না। চকিদার বেলাল এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনেকের টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে। চকিদার বেলাল এইভাবে কমপক্ষে অর্ধশত মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল মান্নান বলেন, ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ (চকিদার) মো. বেলাল সহজ সরল পাহাড়ি বাঙ্গালী মানুষের মোবাইল হাতে নিয়ে পিন সেটআপ করে নিজের মোবাইল নাম্বারে মোবাইল ব্যাংকিং এর একাউন্ট হতে টাকা ট্রান্সফার করে নিচ্ছে’। সে টাকা ট্রান্সফার করে নিয়েছে এমন ২৫/৩০ জন পাহাড়ি বাঙ্গালী লোকজন আমাকে অভিযোগ করেছে। তার মধ্যে ১১ জন সুবিধাভোগী পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ নিয়ে রবিবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আসেন। অভিযোগকারী আসার বিষয়ে আমি মুঠোফোনে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তিনি অভিযোগগুলো আমাকে নিয়ে রাখতে বলেন। আজ রবিবার আশুরার কারণে অফিস বন্ধ থাকায় আগামীকাল সোমবার তিনি বিষয়টি দেখবেন।
এদিকে, টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে বিচার চেয়ে ও নিজেদের টাকা ফেরত পেতে আজ রবিবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে ১১ জন পাহাড়ি বাঙ্গালী নারী পুরুষ লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেন। তারা হল, মামু খই মার্মানী, মমতাজ বেগম, কংইকামে মার্মানী, মো. ফারুক, থুইহ্লাচিং মার্মা, চোমাচিং মার্মানী, সুমারী মার্মানী, মাতুই মার্মানী, মো. চাঁন মিয়া, মো. বেলাল (২নং ওয়ার্ডের চকিদার) ও সুমন বড়ুয়া। রবিবার আশুরার কারণে সরকারি অফিস বন্ধ থাকায় অভিযোগকারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে অভিযোগ গুলো ওয়ার্ড মেম্বারের কাছে দিয়ে যায়।
অভিযোগকারী চোমাচিং মার্মানী বলেন, আমি রূপসীপাড়া বাজারে আসলে ৭নং ওয়ার্ডের চকিদার মো. বেলাল আমার মানবিক সহায়তার টাকা আসছে কিনা জিজ্ঞাসা করে। আমি বলি জানিনা। সে আসছে কিনা দেখার জন্য আমার মোবাইল নেয়। কিছুক্ষণ মোবাইলটি টিপাটিপি করে আমার মোবাইল ফেরত দিয়ে বলে তোমার টাকা আসেনি। পরে রূপসীপাড়া বাজারের মোবাইল ব্যাংকিং দোকানদারের মাধ্যমে জানতে পারি আমার টাকা তোলা হয়ে গেছে।
এছাড়া, মমতাজ বেগম, মো. চাঁন মিয়া ও আরেক গ্রাম পুলিশ বেলার সহ অনেকে বলেন, আমাদের মোবাইল থেকে ৭নং ওয়ার্ডের চকিদার মো. বেলাল তার মোবাইলে টাকা ট্রান্সফার করে নিয়েছে। আমাদের কাছে বেলাল যে অনলাইলে টাকা ট্রান্সফার করেছে তার ডকুমেন্ট আছে। আমরা বিচার চাই।
৭নং ওয়ার্ডের চকিদার মো. বেলাল বলেন, আমি অনেকের মোবাইল হাতে নিয়েছে সত্যি। টাকার বিষয়ে জানিনা।
রূপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা বলেন, অনেকে আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসলে আমি তাদের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে যেতে পরামর্শ দিই।
এবিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো রেজা রশীদের সাথে। তিনি বলেন, আমি অভিযোগকারীদের লিখিত অভিযোগগুলো ওয়ার্ড মেম্বারের কাছে রাখতে বলেছি। আগামীকাল আমি বিষয়টি দেখব।
পাঠকের মতামত: